ভিডিও বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বগুড়ার ধুনটে পেঁপে চাষে লাখপতি আকুল

বগুড়ার ধুনটে পেঁপে চাষে লাখপতি আকুল। ছবি : দৈনিক করতোয়া

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : জমি মাত্র চার বিঘা। সেই জমিতে সারি সারি সবুজ গাছ। তিন থেকে চার ফুট উচ্চতার গাছে দেড় থেকে চার কেজি ওজনের পেঁপে। রোদের আলোয় ফলগুলো চকচক করছে। আর হালকা বাতাসে দুলছে গাছের পাতা। যেন সবুজে মোড়া এক স্বপ্নের বাগান। অধিক ফলনশীল ও আকর্ষণীয় রঙের বাবু জাতের পেঁপে, যা চাষ করে চমক দেখিয়েছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার পাঁচথুপি-সরোয়া গ্রামের সফল কৃষি উদ্যোক্তা আতিকুল রহমান আকুল (৩৮)। দীর্ঘ ১২ বছর কৃষিকাজ করে নিজের ভাগ্য বদলেছেন তিনি।

সব মানুষের স্বপ্ন পূরণ হয় না। কিছু স্বপ্ন থেকে যায় অধরা। তবে একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য আর সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে কঠোর পরিশ্রম ও অদম্য ইচ্ছাশক্তিই পারে একজনকে তার কাঙ্খিত স্বপ্ন পূরণ করতে। উদ্যোক্তা আকুলের বেলায়ও হয়েছে তাই। কিন্তু কাজটা সহজ ছিল না। তাকে পেরোতে হয়েছে অনেক কঠিন পথ। অভাব-অনটনের কারণে আকুলের লেখাপড়া প্রাথমিকেই ইতি টানতে হয়েছে।

কিশোর বয়সেই বাবার সাথে কৃষি কাজে জড়িয়ে পড়েন। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে সংসার চলছিল না। এমন বাস্তবতায় তিনি স্থানীয় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে অটোভ্যান কেনেন। এলাকায় অটোভ্যান চালিয়ে কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকেন। কিন্ত এ কাজে ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারেননি। তাই গ্রাম ছেড়ে ঢাকা শহরে যান। সেখানে পোশাক কারখানায় চাকরি শুরু করেন। কয়েক বছর চাকরির সুবাদে ময়মনসিংহের ভালুকার এক কৃষি উদ্যোক্তার সাথে পরিচয় হয়।

পোশাক কারখানার চাকরি ছেড়ে ভালুকার সেই খামারে চাকরি নেন। ওই কৃষি খামারে কাজ করার মধ্য দিয়ে নিজেই কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। তিনি ২০১২ সালে বাড়ি ফিরে মাত্র এক বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ শুরু করেন। একই সাথে অন্যান্য সবজি চাষেও তিনি ঝুঁকে পড়েন। প্রথম থেকে লাভের মুখ দেখেন। ধীরে ধীরে বন্ধকী জমির পরিমাণ বাড়াতে থাকেন।

আরও পড়ুন

এভাবেই চলতি মৌসুমে চার বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করেছেন। চারা লাগানোর তিন থেকে চার মাসের মাথায় গাছে ফল আসা শুরু করে। পেঁপে গাছ উচ্চতায় ৫-৬ ফুট এবং একেকটি পেঁপের ওজন দুই থেকে চার কেজি। চার বিঘা জমিতে পেঁপে চাষে খরচ হয়েছে প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকা। আর এ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৭ লাখ টাকার মতো। বাজারে পেঁপের দাম ভালো, তাই শেষ পর্যন্ত ১৫ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রির আশা করছেন তিনি।

কৃষি উদ্যেক্তা আকুল জানান, আগামীতে পেঁপে চাষের জন্য জমির পরিমাণ বাড়ানো হবে। পেঁপে চাষের সাথে অন্যান্য সবজিও চাষ করবেন। উন্নত জাতের পেঁপের চারা উৎপাদন করবেন। অনেক শিক্ষিত তরুণ বা বেকার যুবক চাকরির জন্য অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। অনেকে ধারদেনা ও ঋণের টাকায় বিদেশ যেতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হন।

অথচ তাদের কৃষি জমি থাকতেও সেইদিকে একটুও খেয়াল করেন না। গ্রামের অনেকে চায়ের দোকানে বসে অলস সময় কাটালেও বাস্তবে কিছুই করেন না। অথচ ভালো কিছু করার মধ্যে কত যে আনন্দ, তা বাস্তবে উপভোগ করছি।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়ার শিবগঞ্জের ময়দানহাট্টা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেহাল দশা

সোনার রেকর্ড দাম, ভরি-১ লাখ ৮২ হাজার, সাধারণ মানুষের সোনা কেনার সীমাবদ্ধতা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে অস্ত্র মামলায় যুবকের ১০ বছর কারাদন্ড

বগুড়ার নন্দীগ্রামে সার ও কীটনাশকের দোকান পরিদর্শন করলেন উপ-পরিচালক

বগুড়ার ধুনটে পেঁপে চাষে লাখপতি আকুল

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে প্রাথমিকের তিন শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত