রংপুরে এ্যানথ্রাক্স রোগের ভয়াবহতা, ২ জনের মৃত্যু

রংপুর ও পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি : রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে এ্যানথ্রাক্স। গত দুই মাসে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। ইতোমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন দুইজন। পাশাপাশি মারা গেছে প্রায় ১ হাজার গবাদি পশু।
গত আগস্ট মাসে অসুস্থ গরুর মাংস কাটতে গিয়ে সংক্রমিত হন উপজেলার পারুল ইউনিয়নের মাইটাল এলাকার কৃষক আব্দুর রাজ্জাক। কয়েক দিনের মধ্যেই তার শরীরে জ্বর, ফোড়া ও ঘা ছড়িয়ে পড়ে। পরে তাকে রংপুর কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
একই ইউনিয়নের আনন্দী ধনিরাম গ্রামের গৃহিণী কমলা বেগমও অসুস্থ গরুর মাংস রান্না করতে গিয়ে আক্রান্ত হন। কয়েকদিনের মধ্যে তার অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এখনও তার পরিবারের তিন সদস্য সংক্রমিত অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
আক্রান্তদের একজন দুলাল মিয়া বলেন, আমরা বুঝতে পারিনি অসুস্থ গরুর মাংস খেলে বা ছুঁলেই এমন রোগ হয়। মায়ের মৃত্যু হয়েছে, আমি, আমার বোন আর আমার নাতি আক্রান্ত হয়ে কষ্ট পাচ্ছি।
আরও পড়ুনপারুল ইউনিয়নের বিরাহীম গ্রামের হুমায়ন খান জানান, চলতি বছরের কোরবানির ঈদের পর থেকে অ্যানথ্রাক্স রোগ ছড়িয়ে পরে। এই এলাকায় শত শত গবাদি পশু আক্রান্ত হলেও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। সঠিক সময় গরুর চিকিৎসা দিলে আক্রান্তের হার কমিয়ে আসতো বলে জানান তিনি।
রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু ছাঈদ জানান, আক্রান্ত পশুর নমুনা পরীক্ষায় এ্যানথ্রাক্স ধরা পড়েছে। ইতোমধ্যেই পীরগাছা ও আশপাশে ৩২ হাজার পশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে। কার্যক্রম চলমান আছে। আশা করছি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা করতোয়াকে বলেন, আমরা বিষয়টি আইইডিসিআরকে জানিয়েছি। তবে তাদের নিজে এসে নমুনা সংগ্রহ করা উচিত।
প্রাণি বিশেষজ্ঞ তাহের উদ্দিন ঠাকুর জানান, উপজেলা প্রশাসনের উচিৎ পশু জবাইয়ের সময় তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জবেহ করা। আক্রান্ত পশু কোন ভাবেই জবাই করা ও এর মাংস বিক্রি বন্ধ না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
মন্তব্য করুন